নিজস্ব প্রতিবেদক:
মামুন মাহমুদকে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের সাংসদ শামীম ওসমানের লোক হিসেবে আখ্যা দিয়ে এবং নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতৃত্বে থাকার অযোগ্য উল্লেখ্য করে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করার দাবি জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর আবেদন করেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র ১৯ জন নেতা।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ১৯ জন নেতার স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্রটি বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পৌঁছানো হয়েছে। আবেদনের অনুলিপি বিএনপির মহাসচিব, দুজন স্থায়ী কমিটির সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব এবং সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহসাংগঠনিক সম্পাদককেও দেওয়া হয়েছে।
আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা স ম নূরুল ইসলাম, সাবেক সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ, জয়নাল আবেদীন, হাজী মো. শহীদুল্লাহ, আলাউদ্দিন খন্দকার শিপন, মঈনুল হোসেন রতন, লোকমান হোসেন, বিল্লাল হোসেন, হাসমতউল্লাহ, তুষার আহমেদ মিঠু, আলমগীর হোসেন, আশিক মাহমুদ সুমন, মতিউর রহমান, সেন্টু আহম্মেদ, মইনুল ইসলাম ডালিম, শাহজাহান সাদেক, সিরাজ উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম এবং আবু সাঈদ মাদবর।
আবেদনপত্রে তারা দাবি করেছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের ১৪ মাস অতিবাহিত হলেও তারা থানা ও পৌর কমিটি গঠনে ব্যর্থ হোন। কমিটির আহ্বায়ক তৈমূর আলম খন্দকারকে অব্যাহতি দেওয়ার পর প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবিকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হলেও মামুন মাহমুদের কারণে কমিটিগুলো গঠন সম্ভব হয়নি। পরবর্তী তৃতীয় যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিনকে ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক করা হলে মামুন মাহমুদ তার ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য অধিকাংশ অযোগ্য ও আওয়ামী লীগের এজেন্টদের দিয়ে রাতারাতি ৫টি থানা ও ৫টি পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন।
আবেদনে তারাও আর জানিয়েছে, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে তারেক রহমানের দেওয়া দিক নির্দেশনাকে উপেক্ষা করা হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটিতে এই জেলা থেকে যারা বিভিন্ন পদে রয়েছেন এবং যারা এই জেলার সাবেক সংসদ সদস্য তাদের কোনো মতামত নেওয়া হয়নি।
তাদের দাবি, রাতারাতি ৫টি থানা ও ৫টি পৌর বিএনপির কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে গঠন করা দশটি সার্চ কমিটির সুপারিশ জেলা কমিটিতে উত্থাপন না করে সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ যাতে পরবর্তীতে জেলা কমিটির সভাপতি হতে পারেন, সে লক্ষ্যে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কদের বিভিন্ন থানা ও পৌর কমিটির আহ্বায়ক করার মধ্য দিয়ে তিনি তার পকেট কমিটি গঠন করে নিয়েছেন। এসব কমিটিতে অনেক অযোগ্য ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হলেও সিনিয়র ও ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
আবেদনপত্রে তারা আরও জানিয়েছেন, মামুন মাহমুদ চাচ্ছেন পকেট কমিটির মাধ্যমে তিনি আগামীতে জেলা বিএনপির সভাপতি হতে। তার এমন কর্মকান্ডে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা অসন্তুষ্ট। তিনি বরিশাল নিবাসি হয়েও কেন্দ্রীয় কোনো কোনো নেতাকে ম্যানেজ করে নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে আজকের এই অবস্থানে এসেছেন। তারা ধারণা করছেন, মামুন মাহমুদ দ্বারা ম্যানেজ হওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে বানোয়াট তথ্য দিয়ে থাকেন ব্যক্তি স্বার্থে। তাদের এই অযোগ্যতার কারণে কাজী মনিরের নেতৃত্বাধিন কমিটি বাতিল করা হয়। একই কমিটির সেক্রেটারি ছিলেন মামুন মাহমুদ।
গঠনতন্ত্র মোতাবে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সনের দিক নির্দেশনার পরিপন্থি ও ব্যক্তিস্বার্থে গঠিত শুধু মাত্র জেলা আহ্বায়ক কমিটির দ্বিতীয় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব দ্বারা গঠিত কমিটিকে তারা প্রত্যাখান করেছেন বলেও আবেদনপত্রে জানান। একই সাথে তারা দলের বৃহত্তম স্বার্থে সকল কমিটি বিলুপ্ত করে দলকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষার দাবি করেন তারা।